কোড়ি ও কোমল
এ যেন রে অভিশপ্ত প্রেতের পিপাসা —
সলিল রয়েছে প ‘ ড়ে , শুধু দেহ নাই ।
এ কেবল হৃদয়ের দুর্বল দুরাশা
সাধের বস্তুর মাঝে করে চাই – চাই ।
দুটি চরণেতে বেঁধে ফুলের শৃঙ্খল
কেবল পথের পানে চেয়ে বসে থাকা!
মানবজীবন যেন সকলি নিষ্ফল —
বিশ্ব যেন চিত্রপট , আমি যেন আঁকা !
চিরদিন বুভুক্ষিত প্রাণহুতাশন
আমারে করিছে ছাই প্রতি পলে পলে ,
মহত্ত্বের আশা শুধু ভারের মতন
আমারে ডুবায়ে দেয় জড়ত্বের তলে ।
কোথা সংসারের কাজে জাগ্রত হৃদয়!
কোথা রে সাহস মোর অস্থিমজ্জাময় !
সলিল রয়েছে প ‘ ড়ে , শুধু দেহ নাই ।
এ কেবল হৃদয়ের দুর্বল দুরাশা
সাধের বস্তুর মাঝে করে চাই – চাই ।
দুটি চরণেতে বেঁধে ফুলের শৃঙ্খল
কেবল পথের পানে চেয়ে বসে থাকা!
মানবজীবন যেন সকলি নিষ্ফল —
বিশ্ব যেন চিত্রপট , আমি যেন আঁকা !
চিরদিন বুভুক্ষিত প্রাণহুতাশন
আমারে করিছে ছাই প্রতি পলে পলে ,
মহত্ত্বের আশা শুধু ভারের মতন
আমারে ডুবায়ে দেয় জড়ত্বের তলে ।
কোথা সংসারের কাজে জাগ্রত হৃদয়!
কোথা রে সাহস মোর অস্থিমজ্জাময় !
পাশ দিয়ে গেল চলি চকিতের প্রায় ,
অঞ্চলের প্রান্তখানি ঠেকে গেল গায় ,
শুধু দেখা গেল তার আধখানি পাশ —
শিহরি পরশি গেল অঞ্চলের বায় ।
অজানা হৃদয়বনে উঠেছে উচ্ছ্বাস ,
অঞ্চলে বহিয়া এল দক্ষিণবাতাস ,
সেথা যে বেজেছে বাঁশি তাই শুনা যায় ,
সেথায় উঠিছে কেঁদে ফুলের সুবাস ।
কার প্রাণখানি হতে করি হায় – হায়
বাতাসে উড়িয়া এল পরশ – আভাস !
ওগো কার তনুখানি হয়েছে উদাস ,
ওগো কে জানাতে চাহে মরম বারতা !
দিয়ে গেল সর্বাঙ্গের আকুল নিশ্বাস ,
বলে গেল সর্বাঙ্গের কানে কানে কথা ।।
অঞ্চলের প্রান্তখানি ঠেকে গেল গায় ,
শুধু দেখা গেল তার আধখানি পাশ —
শিহরি পরশি গেল অঞ্চলের বায় ।
অজানা হৃদয়বনে উঠেছে উচ্ছ্বাস ,
অঞ্চলে বহিয়া এল দক্ষিণবাতাস ,
সেথা যে বেজেছে বাঁশি তাই শুনা যায় ,
সেথায় উঠিছে কেঁদে ফুলের সুবাস ।
কার প্রাণখানি হতে করি হায় – হায়
বাতাসে উড়িয়া এল পরশ – আভাস !
ওগো কার তনুখানি হয়েছে উদাস ,
ওগো কে জানাতে চাহে মরম বারতা !
দিয়ে গেল সর্বাঙ্গের আকুল নিশ্বাস ,
বলে গেল সর্বাঙ্গের কানে কানে কথা ।।
আজ কি , তপন , তুমি যাবে অস্তাচলে
না শুনে আমার মুখে একটিও গান !
দাঁড়াও গো , বিদায়ের দুটি কথা বলে
আজিকার দিন আমি করি অবসান ।
থামো ওই সমুদ্রের প্রান্তরেখা -‘ পরে ,
মুখে মোর রাখো তব একমাত্র আঁখি ।
দিবসের শেষ পলে নিমেষের তরে
তুমি চেয়ে থাকো আর আমি চেয়ে থাকি ।
দুজনের আঁখি -‘ পরে সায়াহ্ন – আঁধার
আঁখির পাতার মতো আসুক মুদিয়া ,
গভীর তিমিরস্নিগ্ধ শান্তির পাথার
নিবায়ে ফেলুক আজি দুটি দীপ্ত হিয়া ।
শেষ গান সাঙ্গ করে থেমে গেছে পাখি ,
আমার এ গানখানি ছিল শুধু বাকি ।
না শুনে আমার মুখে একটিও গান !
দাঁড়াও গো , বিদায়ের দুটি কথা বলে
আজিকার দিন আমি করি অবসান ।
থামো ওই সমুদ্রের প্রান্তরেখা -‘ পরে ,
মুখে মোর রাখো তব একমাত্র আঁখি ।
দিবসের শেষ পলে নিমেষের তরে
তুমি চেয়ে থাকো আর আমি চেয়ে থাকি ।
দুজনের আঁখি -‘ পরে সায়াহ্ন – আঁধার
আঁখির পাতার মতো আসুক মুদিয়া ,
গভীর তিমিরস্নিগ্ধ শান্তির পাথার
নিবায়ে ফেলুক আজি দুটি দীপ্ত হিয়া ।
শেষ গান সাঙ্গ করে থেমে গেছে পাখি ,
আমার এ গানখানি ছিল শুধু বাকি ।
সন্ধ্যাসূর্যের প্রতি
আমার এ গান তুমি যাও সাথে করে
নূতন সাগরতীরে দিবসের পানে ।
সায়াহ্নের কূল হতে যদি ঘুমঘোরে
এ গান উষার কূলে পশে কারো কানে!
সারা রাত্রি নিশীথের সাগর বাহিয়া
স্বপনের পরপারে যদি ভেসে যায় ,
প্রভাত – পাখিরা যবি উঠিবে গাহিয়া
আমার এ গান তারা যদি খুঁজে পায় ।
গোধূলির তীরে বসে কেঁদেছে যে জন ,
ফেলেছে আকাশে চেয়ে অশ্রুজল কত ,
তার অশ্রু পড়িবে কি হইয়া নূতন
নবপ্রভাতের মাঝে শিশিরের মতো ।
সায়াহ্নের কুঁড়িগুলি আপনা টুটিয়া
প্রভাতে কি ফুল হয়ে উঠে না ফুটিয়া !
নূতন সাগরতীরে দিবসের পানে ।
সায়াহ্নের কূল হতে যদি ঘুমঘোরে
এ গান উষার কূলে পশে কারো কানে!
সারা রাত্রি নিশীথের সাগর বাহিয়া
স্বপনের পরপারে যদি ভেসে যায় ,
প্রভাত – পাখিরা যবি উঠিবে গাহিয়া
আমার এ গান তারা যদি খুঁজে পায় ।
গোধূলির তীরে বসে কেঁদেছে যে জন ,
ফেলেছে আকাশে চেয়ে অশ্রুজল কত ,
তার অশ্রু পড়িবে কি হইয়া নূতন
নবপ্রভাতের মাঝে শিশিরের মতো ।
সায়াহ্নের কুঁড়িগুলি আপনা টুটিয়া
প্রভাতে কি ফুল হয়ে উঠে না ফুটিয়া !
আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে কী জানি পরান কী যে চায় ! ওই শেফালির শাখে কী বলিয়া ডাকে বিহগবিহগী কী যে গায় ! আজি মধুর বাতাসে হৃদয় উদাসে , রহে না আবাসে মন হায় ! কোন্ কুসুমের আশে , কোন্ ফুলবাসে সুনীল আকাশে মন ধায় ! আজি কে যেন গো নাই , এ প্রভাতে তাই জীবন বিফল হয় গো ! তাই চারি দিকে চায় , মন কেঁদে গায় — ‘ এ নহে , এ নহে , নয় গো ! ' কোন্ স্বপনের দেশে আছে এলোকেশে কোন্ ছায়াময়ী অমরায় ! আজি কোন্ উপবনে বিরহবেদনে আমারি কারণে কেঁদে যায় ! আমি যদি গাঁথি গান অথির - পরান সে গান শুনাব কারে আর ! আমি যদি গাঁথি মালা লয়ে ফুলডালা কাহারে পরাব ফুলহার ! আমি আমার এ প্রাণ যদি করি দান দিব প্রাণ তবে কার পায় ! সদা ভয় হয় মনে পাছে অযতনে মনে মনে কেহ ব্যথা পায় !
মোছো তবে অশ্রুজল , চাও হাসিমুখে
বিচিত্র এ জগতের সকলের পানে ।
মানে আর অপমানে সুখে আর দুখে
নিখিলের ডেকে লও প্রসন্ন পরানে ।
কেহ ভালোবাসে কেহ নাহি ভালোবাসে ,
কেহ দূরে যায় কেহ কাছে চলে আসে —
আপনার মাঝে গৃহ পেতে চাও যদি
আপনারে ভুলে তবে থাকো নিরবধি ।
ধনীর সন্তান আমি , নহি গো ভিখারি ,
হৃদয়ে লুকানো আছে প্রেমের ভাণ্ডার —
আমি ইচ্ছা করি যদি বিলাইতে পারি
গভীর সুখের উৎস হৃদয় আমার ।
দুয়ারে দুয়ারে ফিরি মাগি অন্নপান
কেন আমি করি তবে আত্ম-অপমান !
বিচিত্র এ জগতের সকলের পানে ।
মানে আর অপমানে সুখে আর দুখে
নিখিলের ডেকে লও প্রসন্ন পরানে ।
কেহ ভালোবাসে কেহ নাহি ভালোবাসে ,
কেহ দূরে যায় কেহ কাছে চলে আসে —
আপনার মাঝে গৃহ পেতে চাও যদি
আপনারে ভুলে তবে থাকো নিরবধি ।
ধনীর সন্তান আমি , নহি গো ভিখারি ,
হৃদয়ে লুকানো আছে প্রেমের ভাণ্ডার —
আমি ইচ্ছা করি যদি বিলাইতে পারি
গভীর সুখের উৎস হৃদয় আমার ।
দুয়ারে দুয়ারে ফিরি মাগি অন্নপান
কেন আমি করি তবে আত্ম-অপমান !
আপনি কণ্টক আমি , আপনি জর্জর ।
আপনার মাঝে আমি শুধু ব্যথা পাই ।
সকলের কাছে কেন যাচি গো নির্ভর —
গৃহ নাই , গৃহ নাই , মোর গৃহ নাই !
অতি তীক্ষ্ম অতি ক্ষুদ্র আত্ম – অভিমান
সহিতে পারে না হায় তিল অসম্মান ।
আগেভাগে সকলের পায়ে ফুটে যায়
ক্ষুদ্র ব ‘ লে পাছে কেহ জানিতে না পায় ।
বরঞ্চ আঁধারে রব ধুলায় মলিন ,
চাহি না চাহি না এই দীন অহংকার —
আপন দারিদ্র্যে আমি রহিব বিলীন ,
বেড়াব না চেয়ে চেয়ে প্রসাদ সবার ।
আপনার মাঝে যদি শান্তি পায় মন
বিনীত ধুলার শয্যা সুখের শয়ন ।
আপনার মাঝে আমি শুধু ব্যথা পাই ।
সকলের কাছে কেন যাচি গো নির্ভর —
গৃহ নাই , গৃহ নাই , মোর গৃহ নাই !
অতি তীক্ষ্ম অতি ক্ষুদ্র আত্ম – অভিমান
সহিতে পারে না হায় তিল অসম্মান ।
আগেভাগে সকলের পায়ে ফুটে যায়
ক্ষুদ্র ব ‘ লে পাছে কেহ জানিতে না পায় ।
বরঞ্চ আঁধারে রব ধুলায় মলিন ,
চাহি না চাহি না এই দীন অহংকার —
আপন দারিদ্র্যে আমি রহিব বিলীন ,
বেড়াব না চেয়ে চেয়ে প্রসাদ সবার ।
আপনার মাঝে যদি শান্তি পায় মন
বিনীত ধুলার শয্যা সুখের শয়ন ।
পৃথিবী জুড়িয়া বেজেছে বিষাণ , শুনিতে পেয়েছি ওই — সবাই এসেছে লইয়া নিশান , কই রে বাঙালি কই ! সুগভীর স্বর কাঁদিয়া বেড়ায় বঙ্গসাগরের তীরে , ‘ বাঙালির ঘরে কে আছিস আয়‘ ডাকিতেছে ফিরে ফিরে । ঘরে ঘরে কেন দুয়ার ভেজানো , পথে কেন নাই লোক , সারা দেশ ব্যাপি মরেছে কে যেন — বেঁচে আছে শুধু শোক । গঙ্গা বহে শুধু আপনার মনে , চেয়ে থাকে হিমগিরি , রবি শশী উঠে অনন্ত গগনে আসে যায় ফিরি ফিরি । কত - না সংকট , কত - না সন্তাপ মানবশিশুর তরে , কত - না বিবাদ কত - না বিলাপ মানবশিশুর ঘরে ! কত ভায়ে ভায়ে নাহি যে বিশ্বাস , কেহ কারে নাহি মানে , ঈর্ষা নিশাচরী ফেলিছে নিশ্বাস হৃদয়ের মাঝখানে । হৃদয়ে লুকানো হৃদয়বেদনা , সংশয় - আঁধারে যুঝে , কে কাহারে আজি দিবে গো সান্ত্বনা — কে দিবে আলয় খুঁজে ! মিটাতে হইবে শোক তাপ ত্রাস , করিতে হইবে রণ , পৃথিবী হইতে উঠেছে উচ্ছ্বাস — শোনো শোনো সৈন্যগণ ! পৃথিবী ডাকিছে আপন সন্তানে , বাতাস ছুটেছে তাই — গৃহ তেয়াগিয়া ভায়ের সন্ধানে চলিয়াছে কত ভাই । বঙ্গের কুটিরে এসেছে বারতা , শুনেছে কি তাহা সবে ? জেগেছে কি কবি শুনাতে সে কথা জালদগম্ভীর রবে ? হৃদয় কি কারো উঠেছে উথলি ? আঁখি খুলেছে কি কেহ ? ভেঙেছে কি কেহ সাধের পুতলি ? ছেড়েছে খেলার গেহ ? কেন কানাকানি , কেন রে সংশয় ? কেন মরো ভয়ে লাজে ? খুলে ফেলো দ্বার , ভেঙে ফেলো ভয় , চলো পৃথিবীর মাঝে । ধরাপ্রান্তভাগে ধুলিতে লুটায়ে , জড়িমাজড়িত তনু , আপনার মাঝে আপনি গুটায়ে ঘুমায় কীটের অণু । চারি দিকে তার আপন - উল্লাসে জগৎ ধাইছে কাজে , চারি দিকে তার অনন্ত আকাশে স্বরগসংগীত বাজে ! চারি দিকে তার মানবমহিমা উঠিছে গগনপানে , খুঁজিছে মানব আপনার সীমা অসীমের মাঝখানে ! সে কিছুই তার করে না বিশ্বাস , আপনারে জানে বড়ো — আপনি গণিছে আপন নিশ্বাস , ধুলা করিতেছে জড়ো । সুখদুঃখ লয়ে অনন্ত সংগ্রাম , জগতের রঙ্গভূমি — হেথায় কে চায় ভীরুর বিশ্রাম , কেন গো ঘুমাও তুমি । ডুবিছ ভাসিছ অশ্রুর হিল্লোলে , শুনিতেছ হাহাকার — তীর কোথা আছে দেখো মুখ তুলে , এ সমুদ্র করো পার । মহা কলরবে সেতু বাঁধে সবে , তুমি এসো , দাও যোগ — বাধার মতন জড়াও চরণ এ কী রে করম - ভোগ । তা যদি না পারো সরো তবে সরো , ছড়ে দাও তবে স্থান , ধুলায় পড়িয়া মরো তবে মরো — কেন এ বিলাপগান ! ওরে চেয়ে দেখ্ মুখ আপনার , ভেবে দেখ্ তোরা কারা , মানবের মতো ধরিয়া আকার , কেন রে কীটের পারা ? আছে ইতিহাস , আছে কুলমান , আছে মহত্ত্বের খনি — পিতৃপিতামহ গেয়েছে যে গান শোন্ তার প্রতিধ্বনি । খুঁজেছেন তাঁরা চাহিয়া আকাশে গ্রহতারকার পথ , জগৎ ছাড়ায়ে অসীমের আশে উড়াতেন মনোরথ । চাতকের মতো সত্যের লাগিয়া তৃষিত - আকুল - প্রাণে দিবসরজনী ছিলেন জাগিয়া চাহিয়া বিশ্বের পানে । তবে কেন সবে বধির হেথায় , কেন অচেতন প্রাণ — বিফল উচ্ছ্বাসে কেন ফিরে যায় বিশ্বের আহ্বানগান ! মহত্ত্বের গাথা পশিতেছে কানে , কেন রে বুঝি নে ভাষা ? তীর্থযাত্রী যত পথিকের গানে কেন রে জাগে না আশা ? উন্নতির ধ্বজা উড়িছে বাতাসে , কেন রে নাচে না প্রাণ ? নবীন কিরণ ফুটেছে আকাশে , কেন রে জাগে না গান ? কেন আছি শুয়ে , কেন আছি চেয়ে , পড়ে আছি মুখোমুখি — মানবের স্রোত চলে গান গেয়ে , জগতের সুখে সুখী ! চলো দিবালোকে , চলো লোকালয়ে , চলো জনকোলাহলে — মিশাব হৃদয় মানবহৃদয়ে অসীম আকাশতলে । তরঙ্গ তুলিব তরঙ্গের'পরে , নৃত্যগীত নব নব — বিশ্বের কাহিনী কোটি কণ্ঠস্বরে এককণ্ঠ হয়ে কব । মানবের সুখ মানবের আশা বাজিবে আমার প্রাণে , শত লক্ষ কোটি মানবের ভাষা ফুটিবে আমার গানে । মানবের কাজে মানবের মাঝে আমরা পাইব ঠাঁই , বঙ্গের দুয়ারে তাই শিঙা বাজে — শুনিতে পেয়েছি ভাই ! মুছে ফেলো ধুলা , মুছ অশ্রুজল , ফেলো ভিখারির চীর — পরো নব সাজ , ধরো নব বল , তোলো তোলো নত শির । তোমাদের কাছে আজি আসিয়াছে জগতের নিমন্ত্রণ — দীনহীন বেশ ফেলে যেয়ো পাছে , দাসত্বের আভরণ । সভার মাঝারে দাঁড়াবে যখন , হাসিয়া চাহিবে ধীরে , পুরবরবির হিরণ কিরণ পড়িবে তোমার শিরে । বাঁধন টুটিয়া উঠিবে ফুটিয়া হৃদয়ের শতদল , জগতমাঝারে যাইবে লুটিয়া প্রভাতের পরিমল । উঠ বঙ্গকবি , মায়ের ভাষায় মুমূর্ষুরে দাও প্রাণ — জগতের লোক সুধার আশায় সে ভাষা করিবে পান । চাহিবে মোদের মায়ের বদনে , ভাসিবে নয়নজলে — বাঁধিবে জগৎ গানের বাঁধনে মায়ের চরণতলে । বিশ্বের মাঝারে ঠাঁই নাই বলে কাঁদিতেছে বঙ্গভূমি , গান গেয়ে কবি জগতের তলে স্থান কিনে দাও তুমি । এক বার কবি মায়ের ভাষায় গাও জগতের গান — সকল জগৎ ভাই হয়ে যায় , ঘুচে যায় অপমান ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন